পৌষ্টিকতন্ত্র (Digestive System)

- সাধারণ বিজ্ঞান - জীব বিজ্ঞান | NCTB BOOK

পৌষ্টিকতন্ত্র (Digestive System)

যে তন্ত্রের সাহায্যে খাদ্যবস্তু গ্রহণ, পরিপাক, পরিপাককৃত খাদ্যরন শোষণ এবং খাদ্যের অপাচ্য অংশ মলরূপে ত্যাগ করা হয়, তাকে পরিপাকতন্ত্র বলে। পৌষ্টিতন্ত্রকে দুইটি অংশে ভাগ করা যায়। যথা- ক) পৌষ্টিক নালী। মুখ, মুখবিবর, গলবিল, অন্ননালী, পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদান্ত্র এবং পায়ু। মানুষের পৌষ্টিকনালী মুখ থেকে পায়ু পর্যন্ত বিস্তৃত ৮-১০ মিটার লম্বা। খ) পৌষ্টিক গ্রন্থি : লালাগ্রন্থি, অগ্নাশয় ও যকৃত।

 

Content added By

মুখবিবর (Mouth Cavity)

দাঁত, জিহ্বা, তালু প্রভৃতি মুখবিবরে থাকে। মানুষের দুধের দাঁতের সংখ্যা ২০। পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দাঁতের সংখ্যা ৩২টি। দাঁতের এনামেল দেহের সবচেয়ে কঠিন অংশ।

 

Content added By

পাকস্থলী (Stomach)

পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত রসকে পাচক রস বা গ্যাস্ট্রিক রস বলে। পাকস্থলীর প্যারাইটাল কোষ থেকে হাইড্রোক্লোরিক এসিড (HCl) নিঃসৃত হয়, যা খাদ্য পরিপাকে অংশ নেয়। পেপটিক আলসার হলো মানবদেহের পাচনতন্ত্রের অম্ল পরিবেশযুক্ত (অর্থাৎ পাকস্থলী এবং ক্ষুদ্রান্তের ডিওডেনাম) অংশের ক্ষতজনিত একটি রোগ। এন্ডোসকপির সাহায্যে পেপটিক আলসার রোগ নির্ণয় করা হয়।

 

Content added By

ক্ষুদ্রান্ত্র (Small intestine)

ক্ষুদ্রান্তের দৈর্ঘ্য ৬-৭ মিটার। ক্ষুদ্রান্ত্র তিনটি অংশে বিভক্ত। যথা- ডিওডেনাম. জেজুনাম এবং ইলিয়াম।

 

Content added By

বৃহদান্ত্র (Large intestine)

বৃহদান্ত্র এর দৈর্ঘ্য ২ মিটার। বৃহদান্ত্র তিনটি অংশে বিভক্ত। যথা- সিকাম, কোলন এবং মলাশয়। সিকাম থেকে বহির্বৃদ্ধি রূপে উত্থিত, বদ্ধভাবে সমাপ্ত কনিষ্ঠ আঙ্গুলের ন্যায় সরু থলের নাম অ্যাপেনডিক্স (Appendix)। অ্যাপেনডিক্স থাকে তলপেটে ডানদিকে। লম্বায় এটি ২-২০ সেমি. পর্যন্ত হতে পারে। অ্যপেনডিক্সের প্রদাহকে অ্যাপেনডিসাইটস (Appendicitis) বলে।

Content added By

যকৃত (Liver)

মানুষের শরীরের সর্ববৃহৎগ্রন্থি হল যকৃত (Liver)। যকৃতের প্রদাহকে হেপাটাইটিস (Hepatitis) বলে। যকৃতের প্রদাহের জন্য দায়ী হেপাটাইটিস ভাইরাস। এই ভাইরাস পাঁচ ধরণের। যথা- Hepatitis A,B,C,D,E ।

রক্তের লোহিত কণিকা যকৃতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে বিলিরুবিন উৎপন্ন হয়। যকৃতে বিলিরুবিনের কনজুগেশন হয়। যকৃতে প্রদাহ হলে বিলিরুনের কনজুগেশন বাধাগ্রস্থ হয়। ফলে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায়। একে জন্ডিস বলে। জন্ডিস কোনো রোগ নয় এটি রোগের উপসর্গ মাত্র। রক্তে বিলিরুবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ০.২-০.৮ মি.গ্রা./ডেসিলিটার। পিত্তের বর্ণের জন্য দায়ী বিলিরুবিন। হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস থাকলে নবজাতকের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়-

ক) Hepatitis B Immunoglobulin – HBIG (১ ডোজ): জন্মের ১২ ঘন্টার মধ্যে

খ) Hepatitis B ভ্যাকসিন (৩টি ডোজ): জন্মের ১২ ঘন্টার মধ্যে, ১ মাস এবং ৬ মাস বয়সে।

 

পুষ্টি ও পরিপাক (Nutrition & Digestive)

অধিকাংশ খাদ্যবস্তু বৃহৎ অণু হিসেবে গৃহীত হয়। এসব বৃহত্তর ও জটিল খাদ্যাণু পরিপাকতন্ত্রের উৎসেচক বা এনজাইম (এক ধরণের আমিষ জাতীয় পদার্থ) এর সহায়তায় দ্রবণীয়, ক্ষুদ্রতর, সরল ক্ষুদ্রাণুতে পরিণত হয়ে দেহে শোষিত ও আত্তীকরণের উপযোগী হয়।

Content added By

 

পুষ্টি ও পরিপাক (Nutrition & Digestive)

অধিকাংশ খাদ্যবস্তু বৃহৎ অণু হিসেবে গৃহীত হয়। এসব বৃহত্তর ও জটিল খাদ্যাণু পরিপাকতন্ত্রের উৎসেচক বা এনজাইম (এক ধরণের আমিষ জাতীয় পদার্থ) এর সহায়তায় দ্রবণীয়, ক্ষুদ্রতর, সরল ক্ষুদ্রাণুতে পরিণত হয়ে দেহে শোষিত ও আত্তীকরণের উপযোগী হয়।

Content added By
পানিতে ফ্যাটের প্রবন
পানিতে ফ্যাটের ইমালসন
পানিতে কার্বহাইড্রেটের দ্রবন
পানিতে কার্বহাইড্রেটের ইমালসন

ডায়রিয়া (Diarrhoea)

বন্যার পর ডায়রিয়া অসুখের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। ডয়রিয়ার মূল সমস্যা হল ঘন ঘন পাতলা পায়খানার কারনে অতি অল্প সময়ে শরীর থেকে প্রচুর পানি ও লবন বেরিয়ে যায়। বিশেষ করে সোডিয়াম ও পটাসিয়ামের ঘাটতি জীবনের জন্য ঝুকিপূর্ণ হয়। খাবার স্যালাইন (ORal Saline ORS) শরীরে পানি ও লবনের ঘাটতি পূরণ করে। ওর স্যালাইন হলো মুখে গ্রহনযোগ্য লবন ও গ্লোকোজ মিশ্রিত পানি। এতে সোডিয়াম ক্লোরাইড, পটাসিয়াম ক্লোরাইড প্রভৃতি লবণ থাকে। আধা লিটার পানিতে এক প্যাকেট ওর স্যালাইন মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করা হয়। এবং এই দ্রবণ ফ্রিজে না রাখলেও প্রায় ১২ ঘন্টা নিরাপদ থাকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোডিয়াম ক্লোরাইডের ০.৯% জলীয় দ্রবণকে নরমাল স্যালাইন (Normal Saline) বলে।

 

Content added By

হরমোন (Hormone)

অন্তঃক্ষরা গ্রন্হি নিঃসৃত ‍যে জৈব রাসায়নিক পদার্থ রক্ত বা লসিকার মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে দেহের দূরবর্তী স্থানে পৌঁছে নির্দিষ্ট শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলী সম্পন্ন করে এবং ক্রিয়া শেষে নিজে নিঃশেষ হয়ে যায়, তাকে হরমোন বলে। হরমোন (প্রাণরস) মানবদেহের রাসায়নিক দূত হিসেবে কাজ করে। এদের রাসায়নিক প্রকৃতি স্টেরয়েড, প্রোটিন বা ফেনলধর্রী

 

Content added By
থাইরক্সিন
প্রোল্যাকটিন
এড্রিনালিন
সোমোটোট্রফিক
ইনসুলিন
গ্লুকোগন
থাইরাক্সন
থাইরোক্যালসিটোনিন

বহুমূত্র (Diabetes)

ইনসুলিন হরমোনে অভাব জনিত রোগ ডায়াবেটিস। অগ্ন্যাশয়ে যদি প্রয়োজনীয় ইনসুলিন তৈরি না হয় (ইনসুলিন এর অভাব হয়) তখন রক্তে শর্করার (গ্লুকোজের) পরিমান স্থায়ীভাবে বেরে যায় এবং অতিরিক্ত শর্করা বা গ্লুকোজ প্রস্রাবের সঙ্গে নির্গত হওয়ার দরুণ যে রোগ হয় তাকে বহুমূত্র বলে।ডায়াবেটিস ছোয়াঁচে বা সংক্রামক রোগ নয়। ঘন ঘন প্রসাব হওয়া এ রোগের লক্ষণগুলোর একটি। বহুমূত্র রোগ মানবদেহের কিডনি বিনষ্ট করে। এ রোগের চিকিৎসায় ইনসুলিন ব্যবহৃত হয়। চিনি জাতীয় খাবার বেশি খেলে ডায়াবেটিস রোগ হয়- কথাটি সত্য নয়।

 

Content added By

গ্রন্হি (Gland)

গঠনগত ও কর্যগতভাবে বিশেষিত যে কোষ বা কোষগুচ্ছ দেহের বিভিন্ন জৈবনিক প্রক্রিয়া প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ ক্ষরণ করে, তাকে গ্রন্হি এক ধরনের রূপান্তরিত আবরণী কলা বা টিস্যুক। গ্রন্হি দুই প্রকার। যথা-

 

ক) অন্তঃক্ষরা গ্রন্হি: পিটুইটারি, থাইরয়েড, থাইমাস, অ্যাড্রেনাল, শুক্রাশয়, ডিম্বাশয় ইত্যাদি অন্তঃক্ষরা গ্রন্হি। পিটুইটারি গ্রন্হিকে প্রভু গ্রন্হি বা গ্রন্হিরাজ বলা হয়। কারণ পিটুইটারি গ্রন্হি নিঃসৃত হরমোনের সংখ্যা বেশি এবং অন্যান্য গ্রন্হির ‍উপর এর প্রবাব বেশি।

 

খ) বহিক্ষরা গ্রন্হি: সিবেসিয়াস, সেরুমিনাস, স্তনগ্রন্হি, লালাগ্রন্হি, ল্যাক্রিমাল গ্রন্হি,যকৃত, অগ্ন্যাশয় ইত্যাদি। চোখের পানির উৎস ল্যাক্রিমাল গ্রন্হি।

 

Content added By
অগ্ন্যাশয়
আন্ত্রিক গ্রন্থি
যকৃৎ
গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি
Promotion